পেটের অসুখ দূর ঘরোয়া করার উপায়

 পেটের অসুখ দূর করার ঘরোয়া উপায়,হঠাৎ পেট খারাপ হলে করণীয়,পেটের ব্যাকটেরিয়া দূর করার উপায়,পেট খারাপের এন্টিবায়োটিক,অন্ত্র ভালো রাখার উপায়,পেটের অস্বস্তি দূর করার উপায়,পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়



কথায় আছে যতনে রতন মিলে। আপনি যদি আপনার পেটের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চান, অবশ্যই আপনাকে সচেতন হতে হবে। এমন কোন খাবার খাওয়া যাবে না, যা আপনার পেটের সমস্যাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়। আর এই পেটের সমস্যা বলতে আমরা সাধারণত ডায়রিয়া বা লুজ মোশন কে বুঝে থাকি। এই লুজ মোশনকে আমরা পাতলা পায়খানা বলে থাকি।এ রোগে রোগী ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এটি দু -একদিন স্থায়ী হলেও পরবর্তীতে এটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকতে পারে। তাই আপনাকে প্রথমে রোগীকে বাঁচাতে হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। এই প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য আপনাকে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা জানতে হবে। যদি রোগীর অবস্থা খারাপ হয় বা গুরুতর হয়, অবশ্যই  বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। তো চলুন ঘরোয়া উপায়ে আমরা প্রাথমিকভাবে কিভাবে চিকিৎসা দিতে পারি, সেই উপায়গুলো  জেনে নেই

পেটের অসুখের জন্য দায়ী হলো স্ট্যাফিলোকক্কাস ও এসচেরিচিয়া কোলি ব্যাক্টেরিয়া এবং ভাইরাস। তাছাড়া দূষিত এবং অতিরিক্ত তেল কিংবা মশলাযুক্ত খাবার, জাঙ্কফুড ও অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে  হতে পারে।এমনকি  ফ্লু, নরোভাইরাস বা রোটাভাইরাসের মতো ভাইরাসের কারণেও পেটের অসুখ দেখা দিতে  পারে। শিশুদের বেলায় পেট খারাপের প্রধাণ কারণ হিসেবে রোটাভাইরাসকেই দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক সময় পানিতে থাকা পরজীবীর সংক্রমণে ও এমন সমস্যা হতে পারে।  ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ ঔষধ খেলে ও এমন সমস্যা হতে পারে।তাছাড়া  যেসব খাবার খেলে হজমে ত্রুুটি  হয় সেগুলো খেলেও হতে পারে পেটের অসুখ।

পেটের অসুখের লক্ষণ

পেটের অসুখে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়; পেটে খিঁচুনিসহ ব্যথা, বারবার মলত্যাগ করা, অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যপ্রক্রিয়া দূর্বল হয়ে পড়া। ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সমস্যার  কারণে পেটের অসুখ হলে জ্বর, সর্দি হতে পারে।এমনকি পায়খানার সাথে রক্ত পর্যন্ত যেতে পারে।

ঘরোয়া উপায়ে পেট ভাল করার উপায়

পেটের অসুখের সমস্যায় শুরু থেকে প্রতিকারের চেষ্টা করলে বেশিরভাগ সময় দ্রুতই সেরে যায়। সাধারণত ওষুধ খেলে পেটের সমস্যা ভালো হয়ে যায়।ভাল হয়ে গেলেও অনেক সময় ঔষধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই সেসব সমস্যা এড়াতে ঘরোয়া উপায় বেছে নেওয়াই সবচেয়ে উত্তম। আসুন জেনে নিন কোন ঘরোয়া উপায়গুলো এক্ষেত্রে কার্যকরী হতে পারে-


ডাবের পানি

পেটের অসুখ তেকে মুক্তি পেতে  দিনে ১-২ গ্লাস ডাবের পানি পান করুন।  এভাবে এক সপ্তাহ ধরে

পান করতে হবে। ডাবের পানি ঘরোয়া উপায়ে পেটের অসুখ সারাতে  বেশ কার্যকর । আবার পেটের অসুখ দেখা দিলে শরীরে শর্করার ঘাটতি দেখা দেয়। ডাবের পানি শর্করার ঘাটতি পূরণে  করে।গবেষনা অনুযায়ী,ডাবের পানি গ্লুকোজ ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ আকারে পেটের অসুখ নিরাময় সহায়তা  করে থাকে।এমনকি পেটের অসুখের পাশাপাশি কিডনির সমস্যা থাকলে তাতে ডাবের পানি পান করতে নিষেধ করা হয়।

পেটের অসুখে দই এর ব্যবহার

পেটের অসুখ কমাতে  দই বেশ কার্যকরী খাবার। পেটের অসুখ নিরাময়ে খাবার খাওয়ার পর এক বাটি দই খেয়ে নিতে পারেন। দৈনিক দুইবার একবাটি করে দই খাবেন। । দইয়ে থাকা উপকারি  ব্যাক্টেরিয়া অন্ত্র সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে থাকে। এনসিবিআই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গবেষণা সূত্রে জানা যায়, দইয়ে আছে প্রোবায়োটিক ল্যাক্টিক অ্যাসিড ব্যাক্টেরিয়া। উপকারী এই ব্যাক্টেরিয়া পেটে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলোকে মেরে ফেলে। তাই পেটের অসুখ থেকে দূরে থাকতে দই খান।

জিরা ভেজানো পানির ব্যবহার

পেটের অসুখ সারাতে একগ্লাস পানিতে এক চা চামচ জিরা ভিজিয়ে দশ মিনিট রেখে দিন।তারপর পানিটুকু ছেঁকে নিন এবং তা ঠান্ডা  হওয়ার পর পান করে নিন। এই মিশ্রণটি দিনে ৩-৪ বার পান করুন। পেটের অসুখ কমাতে  জিরা পানি  কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এই পানি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পেটের অসুখ পুরোপুরি দূর করতে নিয়মিত জিরা পানি পান করতে পারেন। তবে কোন ভাবেই অতিরিক্ত পান করা যাবে না।

পেটের অসুখে লেবুর রস

পেটের অসুখ কমাতে একগ্লাস পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। প্রয়োজনে মনে করলে অল্প  চিনি মেশাতে পারেন। প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর এই পানীয় তৈরি করে পান করে নিন। পেটের অসুখ  সারাতে  লেবুর রস খুবই কার্যকরী ও জনপ্রিয় উপায়। লেবুতে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যালকেমিক উপাদান পেটে অসুখ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া নির্মূলে সহায়তা করে থাকে। 


পেটের অসুখে আদার ব্যবহার

পেটের অসুখ সারাতে আধা চা চামচ আদার রস এর সাথে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। দৈনিক ২-৩ বার এটি পান করুন। পেটের অসুখ কমাতে আদা বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আদা ব্যাক্টেরিয়া নাশক এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদানে ভরপুর। তাই এটি পরিপাকতন্ত্র এবং অন্ত্রের সংক্রমণ কমিয়ে দিতে পারে।  হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও সারিয়ে তোলতেও আদার অবদান রয়েছে।

পোস্ট ট্যাগ:

পেটের অসুখ দূর করার ঘরোয়া উপায়,হঠাৎ পেট খারাপ হলে করণীয়,পেটের ব্যাকটেরিয়া দূর করার উপায়,পেট খারাপের এন্টিবায়োটিক,অন্ত্র ভালো রাখার উপায়,পেটের অস্বস্তি দূর করার উপায়,পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url