বুটের ডালের উপকারিতা
বুটের ডালের উপকারিতা,ডাবলি বুটের অপকারিতা,বুটের ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা,ছোলার ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা,বুটের ডাল খেলে কি ওজন বাড়ে,বুটের ডাল ইংলিশ,এংকর ডালের উপকারিতা,বুটের ডাল কি,ডাবলি বুটের উপকারিতা
![]() |
বুটের ডালের উপকারিতা |
বুটের ডালের উপকারিতা
বুটের ডাল হচ্ছে একটি আঁশ যুক্ত খাবার।তাই এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকা উপাদান পায়খানাকে নরম করে পায়খানার পরিমাণ বেড়ে যায়।ফলে পায়খানা করতে সহজ হয়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বুটের ডাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্বাভাবিকভাবে পায়খানা হওয়ায় ক্ষতিকারক জীবাণু খাদ্যনালীতে থাকতে পারে না। এতে করে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাছাড়া বুটের ডাল রক্তের চর্বি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এই আঁশ যুক্ত খাবারটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
বুটের ডাল মানব দেহের শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম ডালে রয়েছে ৩৬০ কালোরি বা শক্তি আর বুটের ডাল খাওয়ার পর এটি দেহে সহজে হজম হয় না। হজম না হওয়ার কারণে গ্লুকোজ চর্বিতে পরিণত হয়ে রক্তে প্রবেশ করতে অনেক সময় নেয়।তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উত্তম। প্রতি ১০০ গ্রাম বুটের ডালে রয়েছে ১৭ গ্রাম প্রোটিন বা আমিষ, ৬৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং ৫ গ্রাম চর্বি বা ফ্যাট।
বুটের ডালের কার্বোহাইড্রেট বা শর্করায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে। কার্বোহাইডেট, প্রোটিন, ফ্যাট ছাড়াও বুটে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ লবণ। প্রতি ১০০ গ্রাম বুটে রয়েছে ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, লৌহ আছে- ১০০ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন এ আছে ১৯০ মাইক্রোগ্রাম।এছাড়া বুটে রয়েছে ভিটামিন বি১,বি২,ম্যাগনেসিয়াম ও ফসপরাস। এ উপাদান গুলো মানসিক অস্থিরতা দূর করতে সাহায্য করে।
বুটের ডালে যেহেতু ৩৬০ ক্যালরি বা শক্তি রয়েছে অর্থাৎ এটি মানবদেহে অনেক শক্তি যোগান দেয়। ফলে এই ডাল শিশুদেরকে ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ালে তাদের শরীরের শক্তি বজায় থাকবে। মাছ, মাংস এবং ডিমের যে প্রোটিন রয়েছে ডালে রয়েছে প্রায় সমান। তাই বুটের ডাল খুবই উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য। তাছাড়া বুটের ডাল দিয়ে মাংস রান্না করলে খেতে বড়ই সুস্বাদু লাগে। এমনকি ভোটের ছোলার হালুয়া দারুন মজাদার হয়। তাছাড়া এই ডাল ভেজে খাওয়া যায়। তবে কাঁচা চিবিয়ে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
বুটের ডালের আরো উপকারিতা
১। প্রোটিনের পাশাপাশি এতে আছে দ্রবনীয় ও অদ্রবনীয় খাদ্য আঁশ এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য আবশ্যক বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান।
২। বুটের ডাল খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত এলডিএল এর মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
৩। এটি করোনারী হার্ট ডিজিজ এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৪। এই ডালে বিদ্যমান ফোলেট হোমোসিস্টিইনের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদপিন্ডকে সুরক্ষিত রাখে।
৫।বুটে থাকা ম্যাগনেসিয়াম যা হৃদপিন্ডের আর্টারি রিল্যাক্স করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৬। এতে বিদ্যমান জিঙ্ক এবং কপার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৭। এটি ওজন কমাতে চমৎকার কাজ করে থাকে।
৮। এই ডাল ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৯। পরিপাকতন্ত্র ভাল রাখতে বেশ ভূমিকা রাখে।
১০। এটি কোলন টিউমার প্রতিরোধে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখে।
১১। এই ডাল অ্যানিমিয়া বা রক্তশূণ্যতার সমস্যা সমাধানেও বেশ ভাল। কারণ,বুটের ডালে রয়েছে আয়রন।
মুগ ডালের উপকারিতা
হজমে সাহায্য করে
গরমে খাবার অস্বাভাবিক হলেই হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে গরমের এই সময়ে আপনি খাবারের তালিকায় নিয়মিত মুগ ডাল রাখতে পারেন। এই ডাল ফাইবার সমৃদ্ধ এবং স্টার্চ রেজিসটন্ট। ফলে মুগ ডাল হজম করা সহজ হয়।আবার ভেজানো মুগডাল চিবিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যাবে না। হজমের সমস্যা দেখা দিলে মুগ ডাল সেদ্ধ করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
হার্ট ভালো রাখে
মুগ ডাল আপনার হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করবে। এই ডালে আছে ফাইবার, পটাশিয়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।এমনকি ভেজানো মুগ ডাল খেলে তা ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে। আবার এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে। নিয়মিত মুগ ডাল খেলে হার্টের সমস্যার ঝুঁকি কমে আসে।
গরমে উপকারী
গরমে নিয়মিত মুগ ডাল খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ডাল আমাদের শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গরমের দিনে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে, যা অনেকটাই কমিয়ে দেয় এই ডাল। পাশাপাশি ত্বক ভালো রাখতে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও এটি বেশ উপকারী ডাল।
শক্তি জোগায়: এই ডালে প্রচুর লৌহ বা আয়রন আছে। তাই এটি স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। এটি আমাদের শরীরে বল বৃদ্ধি করে, শরীরকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি: এতে প্রচুর ফাইবার থাকায় তা হজমে সাহায্য করে।তাছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এই ডাল উপকারী।
হার্ট ভাল রাখে: হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখতে মাষকলাই ডাল বেশ উপকারী। এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এমনকি শরীরে কোলস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে এ ডাল উপকারী। ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ এই ডাল রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখতে সাহায়ক ভূমিকা পালন করে।
শুক্র বাড়ায়: এই ডাল শুক্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে থাকে।এমনকি ‘প্রাকৃতিক উদ্দীপক’ হিসেবে এই ডাল শুক্রসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে দারুন কাজ করে।আবার পানিতে ৫-৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ঘি দিয়ে ভেজে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
পেশি গঠনে সহায়তা:দেহের পেশির কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে মাষকলাই ডাল।তাছাড়া শরীরের বৃদ্ধিতে ডালে থাকা প্রোটিন খুবই দরকারি।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে মাষকলাই ডাল।
স্নায়বিক উন্নতি: স্নায়বিক দুর্বলতা, স্মৃতি দুর্বলতা, সিজোফ্রেনিয়ার, হিস্টিরিয়ার মতো সমস্যা দূর করতে বেশ কার্যকর এই ডাল।
ব্যথা দূর কর: মাষকলাই ডালের দারুণ ব্যথানাশক গুণ রয়েছে। এমনকি অস্থিসন্ধির ব্যথা কমাতে এ ডাল বেশ উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণাতেও মাষকলাই ডালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
ত্বক ভাল রাখে: এই ডাল দারুণ স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে। যেমন-ত্বক থেকে ময়লা, মৃত কোষ সরিয়ে ত্বকের সতেজতা ও ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় মাষকলাই ডাল।এই ডাল রোদে পোড়া স্কিনের ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক শক্তি,যা মুখের ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে।তাছাড়া মুখের দাগ দূর করতেও মাষকলাইয়ের ডালের ব্যবহার দেখা যায়।
মাথার খুশকি দূর : জানলে অবাক হবেব যে,মাষকলাইয়ের ডাল মাথায় মেখে নিলে চুল নরম হয় ও খুশকি দূর হয়।