প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঘরোয়া উপায়
প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঘরোয়া উপায়
মূত্রনালী নিন্মাংশ আক্রান্ত হয় ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমনের কারণে। এটি নারী পুরুষ উভয়েরই হতে পারে। পুরুষের চেয়ে নারীরা এ রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। কারণ তাদের মূত্রনালীতে যে টিউব রয়েছে সেটা পুরুষের চেয়ে অনেক ছোট। তাই ব্যাকটেরিয়া যেকোনো সময় আক্রান্ত করে ফেলে।যার কারণে পুরুষদের চেয়ে নারীরে বেশি আক্রান্ত হয় এ রোগে। আর এই ধরনের রোগের জন্য বিশেষ করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, যৌনকাজ, বয়স, ডায়াবেটিস, গর্ভকালীন সময় ইত্যাদিকে দায়ী করা হয়।
প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে বেশ কিছু লক্ষণও দেখা দেয়।
- বিশেষ করে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়
- প্রস্রাবের রাস্তায় চুলকানি হয়
- তলপেটে ব্যথা হয়
- প্রস্রাব করতে গেলে অসুবিধা হয়
- আর ঘন ঘন প্রস্রাব অল্প অল্প করে হয়
- প্রস্রাবে অস্বাভাবিক প্রচন্ড চাপ অনুভব করা হয়
- দুর্গন্ধময় ঘোলাটে প্রস্রাব হয়ে থাকে
আর উপরোক্ত লক্ষণগুলো যখন আপনার শরীরে দেখা দিবে ভয় না পেয়ে আপনি বাড়িতে কিছু নিয়ম মেনে ঘরোয়া পরিবেশেই এই চিকিৎসা করতে পারেন।
- বেশি করে পানি পান করুন আর বেশি করে পানি পান করলে ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশনের কারণে শরীরে পানির অভাব হলে বা ডিহাইড্রেশন হলে তা পূরণ হয়ে যাবে।
- ফ্লইড যুক্ত তরল খাবার গ্রহণ করুন। আর এটি পেতে পারেন আপনি রঙিন ফল থেকে। কারণ রঙিন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফ্লইড থাকে।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন সি কেবলমাত্র শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না তা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে বা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে দেয়। তাই নিয়মিত ভিটামিন সি খেলে এই ভিটামিন ’সি’ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। আর এটি পেতে পারেন বিভিন্ন ফল থেকে। যেমন আমলকি, লেবু, মালটা ইত্যাদি ইত্যাদি।
- খেতে পারেন ’ক্রানবেরি’ ফল, এটি প্রসাব ইনফেকশনের মুক্তিতে ভালো কাজ করে থাকে। তাছাড়া এটি প্রোবায়োটিক খাবার ও খাবারেও সমস্যা দূর করতে পারে। এজন্য প্রসিদ্ধ হতে পারে দই। কারণ প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ উপাদান এই খাবার গ্রহণ করলে শরীর উপকারি ব্যাকটেরিয়া পেয়ে থাকে বা শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
- ব্যক্তিগতভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে এ সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। আর এজন্য প্রস্রাবের ব্যাগ আটকে রাখা যাবে না। আর টয়লেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যক্তিগত অঙ্গের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে এবং সচেতন হতে হবে।
- গবেষকদের মধ্যে বেকিং সোডা পানির সাথে মিশিয়ে খেলে দূর হতে পারে আপনার মূত্রনালী সংক্রমণ। এজন্য আপনাকে এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিতে হবে এবং সেটি প্রতিদিন একবার খেলে প্রস্রাবে জ্বালা বা ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। তবে খেয়াল রাখবেন যেন অতিরিক্ত বেকিং সোডা গ্রহণ না করা হয়। এতে করে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
- গরম পানিতে গোসল করলে প্রস্রাবের ইনফেকশন বা প্রস্রাবের সংক্রমষণ অনেকটা কমে আসতে পারে। তাই কুসুম গরম পানিতে গোসল করে নিন এবং সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।
- মূত্রনালী সংক্রমণ ঠেকাতে সেলারি বীজ খেতে পারেন।এক কাপ কুসুম গরম পানিতে কিছুটা সেলারি বীজ দিয়ে ঢেকে দিন এবং মিশ্রণটি ৮ মিনিট পর ছেকে নিন। এটা আপনার মূত্রনালী সংক্রমনে দারুন কাজ করবে।
- সংক্রমণ ঠেকাতে শসা খেতে পারেন। এটি প্রস্রাবে ইনফেকশন ঠেকাতে অনেক ভালো কাজ করে। তাই মূত্রনালী সংক্রমণ ঠেকাতে কমপক্ষে একটি শসা হলেও স্লাইস করে খেতে পারেন।
- প্রসাবের জ্বালাপোড়া কমাতে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। গরম পানি নিয়ে আপনার তলপেটের উপর রেখে দিতে পারেন এবং এতে করে আপনার প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনেকটাই কমে আসবে। আর এটি করবেন গরম চেক দেওয়ার জন্য।
- প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করতে আপনি খেতে পারেন ব্লকলি। ব্লকলিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। এটি প্রস্রাবকে এসিডিক করে ইনফেকশন কে নষ্ট করে দেয়। তাছাড়া পাশাপাশি এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুনে বাড়িয়ে দেয়। তাই ব্রকলি খেতে পারেন আপনার প্রস্রাবের সমস্যা দূর করার জন্য।
- প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করার জন্য খেতে পারেন দারুচিনি। এটি এন্টি ব্যাকটেরিয়াল সমৃদ্ধ একটি উপাদান। এটি শরীলের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া কে ধ্বংস করে দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ই -কলাই ভাইরাস কে প্রতিরোধ করে। প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করে দেয়। তাই প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করার জন্য খেতে পারেন দারুচিনি।
- প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করার জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পেঁপে খেতে পারেন। কারণ, এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বাড়িয়ে দেয় এবং প্রস্রাবকে এসিডিক করে শরীরের ইনফেকশন দূর করে দেয়। অর্থাৎ শরীরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জমতে দেয় না। তাই গাজর টমেটো থেকে এই পেপে কয়েক তিনগুণ ভালো কাজ করে। যার কারণে এটি ইনফেকশন দূর করতে খুবই কার্যকর।
- প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করতে আপনি খেতে পারেন হ্যালোসিন সমৃদ্ধ উপাদানের ভরপুর রসুন। এটি কাঁচা খেলে অনেক উপকার হয়। আর এটি শরীরের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। তাছাড়া এটি ই-কলাই ব্যাকটেরিয়া সহ অন্যান্য ব্যাকটেরিয়াকে কে দমন করতে খুবই কার্যকর।এমনকি বারবার ইনফেকশন হওয়া রোধ করে থাকে।
পোস্ট ট্যাগ:
প্রস্রাবে ইনফেকশনের ঘরোয়া উপায়,প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে কি ঔষধ খেতে হবে,ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম,প্রসাবে ইনফেকশন লক্ষণ,প্রস্রাবে ইনফেকশনের টেস্ট,প্রস্রাবে ইনফেকশনের কারণ,বার বার ইউরিন ইনফেকশন,গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার,ইউরিন ইনফেকশন হলে কি সমস্যা হয়